বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৩

লুঙ্গির জয়জয়কার

ঈদ বাজারে লুঙ্গির জয়জয়কার খবরটি প্রথম আলো পত্রিকা দেখা গেলো! এই লাইনটি পরেই প্রশ্ন জাগল, যাকাতে তো লুঙ্গি আর শাড়ি দেয়া হয় দরিদ্র জনগনের মাঝে! এই বছর বারিধারার  মানুষরা কি লুঙ্গির পরিবর্তে ফুল/ হাফ প্যান্ট দিচ্ছেন যাকাতে? তারা তো লুঙ্গী পরা একজন রিকশা চালককে নিজেদের এলাকায় ধুঁকতে দেন না! এর মানে উনারা লুঙ্গী নামক পরিধেয় বস্ত্রটিকে নিজেদের ঐতিহ্য থেকে মুছে দিতে চান!


দরিদ্র মানুষের কাছে লুঙ্গী হল সবচেয়ে আরামদায়ক কাপড়। শুধু  দরিদ্র নয় মধ্যবিত্তদের মাঝেও জনপ্রিয় সমান ভাবে। পুরান ঢাকার সেই সাদা লুঙ্গীর ঐতিহ্য আজো বহাল! যত ধনাঢ্য হন না কেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা সাদা লুঙ্গী পরতেই হবে এবং পরছেনও।

৮৫ হাজার গ্রামের দেশ বাংলাদেশ। কৃষি প্রধান দেশে আমাদের সোনার বাংলা। এই বাংলার গ্রামের শতভাগ মানুষ লুঙ্গী পরিধান করেই নিজেদের জীবন পার করে দিচ্ছেন। কোনো অনুষ্ঠান, পার্বণ ছাড়া পাজামা কিংবা প্যান্ট গ্রামের মানুষ পরিধান করে না।

আমাদের দেশের এই ঐতিহ্যবাহী  পোশাকটি বিদেশেও দারুন জনপ্রিয়। হানিফ সংকেতের পরিচালনায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে একবার দেখানো হয়েছিল বিদেশীরা লুঙ্গীকে কিভাবে ব্যবহার করে! তাদের ভাষ্যটা ছিল ” অসাধারন একটি পোশাক, বোতাম, চেইন ছাড়া পরা যায়” ! আরামদায়ক, পাতলা পোশাক!

রমরমা চড় থাপ্পড়ের ব্যবসা

চমকে উঠার মত শিরোনাম! কোথায় হচ্ছে এই ব্যবসা! সারা বছর জুড়েই হচ্ছে তবে ঈদ কিংবা কোন বড় উপলক্ষ আসলে বেড়ে যায় ঐ চড় থাপ্পড় ব্যবসা কদর। উপচে পরা ভীর লক্ষ্য করা যায় সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে। বিয়ে শাদীতেও এই সেবা জমজমাট। গ্রামে গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে এই ব্যবসা!

একটি সময় এই সেবা শুধু নারীরাই নিতে যেতেন। এখন নারী পুরুষ, ছেলে, মেয়ে সকল বয়সীরা এই সেবা নিতে আগ্রহী! সকলেই যায় যেতে হয় মতো অংশ হয়ে গেছে। কোথায় সেই চড় থাপ্পড় জায়গা যেখানে গিয়ে আমরা সেবা নেই?
- মেয়েদের জন্য বিউটি পার্লার
- ছেলেদের জন্য সেলুন
দুই নামে পরিচিত হলেও এখন সেবা অনেক মিল আছে।

এখানে কি হয়? ফেসিয়াল? পুরা অংশটাই চড় থাপ্পড় যাকে আমরা বলি মেসেজ! বডি ম্যাসেজ! রূপচর্চার জন্য রমরমা ব্যবসা। যেখানে প্রতারণা আর ধাপ্পাবাজি দিয়েই বেশীরভাগ সেলুন আর পার্লার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে।

ছেলেদের সেলুনে কি করা হয়? বর সাজানো, চুল কাটা, চুলে রঙ শেভ, ফেসিয়াল ইত্যাদি। মেয়েদের বেলায় তালিকাটা বেশ লম্বা! বউ সাজানো, চুল রঙ, চুল কাটা, নখ ভুরু কাটা, হাত পা পরিস্কার, চুলের তেল থেকে মেহেদী লাগান, রূপ চর্চার নানা দিক, স্পা আরও কতো কি! সকল সেবার সঙ্গেই চড় থাপ্পড় মারা ম্যাসেজ সেবা দিয়ে থাকে।
এইসব যায়গার আরও একটি মিল আছে যেটায় অনেকেই বিব্রত! সেবা নিতে গেলে দেখা যায় দায়িত্বরত কর্মীরা আলাদা ভাষায় কথা বলছে! যাতে সেবা গ্রহীতা বুঝতে না পারে। এটা নিয়ে নানা সময়ে অভিযোগ করা হলেও পরিবর্তন আসেনি।

পারসোনার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করে একজন ডাক্তার খুব আলোচিত হয়েছিলেন! যেখানে তারা গোপন ক্যামেরায় ধারন করছিলেন উক্ত সেবা গ্রহীতার ছবি! খুব আলোচিত, সমালোচিত হয়েছিল সেই খবরটি! পরবর্তীতে জানা গেছে অভিযোগ দাতার সঙ্গে মোটা অঙ্কের লেনদেন করে মামলা তুলে নেয়া হয়েছে! যার বিপরীতে পারসোনা ঘোষণা করলো যারা সেবা নিতে যাবে তাদের সাথে থাকা কোন মূল্যবান সামগ্রীর দায়িত্ব কর্তৃপক্ষ নিবে না !  

সেলুনে ছেলেদের চুল কাটে ১০০/- ২০০/- বা ৩০০/- টাকার মধ্যেই। কিন্তু  মেয়েদের বিউটি পার্লারে চুলের মাথা ছাটতে পারা যায় না এই অঙ্কের  টাকায়। অথচ ছেলেদের চুল কাটার সময় এবং পরিশ্রম চোখে পরার মতো। তদ্রুপ একজন বউ সাজাবে – ৮০০০/- ১২০০০/- বা ১৬০০০/- টাকা নিচ্ছে! বলা হয় এক্সপার্ট, নতুন, মাঝামাঝি ধরনের মেয়ে দিয়ে বউ সাজানোর জন্য মূল্য আলাদা!

শেভ করতে দেখা যায় পুরু মুখ জুড়ে শেভিং ফোম মাখে(!)কিন্তু কেন? এর কোন উত্তর নেই(!), চুল কেটে ঘাড় পিঠ মাথায় কিছু চড় থাপ্পড় নামক ম্যাসেজ তেমনি মেয়েদের বেলায় ও ফেসিয়াল করতে গেলে শুরুতেই কিছু ম্যাসেজ আরাম তারপর শসা, আলু! উপটান তেলেসমাতি দিয়ে ব্যাস নানা নামকরণে নেয়া হয় নানা মূল্য! ফেসিয়াল শেষে কিছু কিল ঘুসি পিঠে যে ম্যাসেজ নামে পরে না এটি বলা বাহুল্য!


স্পা করতে গেলে তো মনে হয় মহারানী এসেছেন উনাকে বরণ করছেন। গল্প করছেন, জুস খাওয়াচ্ছেন আরও যে কতো কি! বিনিময়ে নিয়ে নিচ্ছে ৫-১০ হাজার টাকা ঘণ্টা অনুযায়ী! হাস্যকর হলেও সত্য এমন একটি সেবা আমি একবার নিতে গিয়েছিলাম। ৩০ মিনিটে ২০০০ টাকা দিয়ে! উদ্দেশ্য একটাই আসলে কি কি হচ্ছে ওখানে? তারপর থেকে আমার স্বামী বাসায় আসার পর আমাকে খেপাত ও তুমি ২০০০ টাকা দিয়ে এক গ্লাস জুস খেয়ে আসলা? মাসে কয় বার যেতে হবে? উত্তরে- মাসে একবার! ব্যাপার না যেও! এক গ্লাস জুস বলে কথা! এর পর আর যাওয়া হয়নি।
রূপচর্চা কোন বয়স থেকে দরকার? এর উত্তরে রূপ বিসেজ্ঞরা  বলেন মেয়েদের বয়স ৩০ বছর হবার আগে পার্লারে রূপচর্চা করতে আসার প্রয়োজন নেই! কিন্তু পার্লারে গেলে দেখা যায় কিছু কিছু প্যাকেজ- স্কুল, কলেজের ছাত্রীদের জন্য যেগুলু বরাদ্দ এবং মূল্য ২০০-৪০০ টাকা। এই মেয়েগুলুর বয়স তো ৩০ বছর এর ধারে কাছেও না! তাহলে আপারা কি করছেন? ক্যামেরার সামনে এক কথা বলছেন আর উনাদের দেয়া সেবা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভিন্ন চিত্র মিলে!
ঈদ উপলক্ষে তো এই চড় থাপ্পড় খেতে সকলেই হুমড়ি খেয়ে পরছে। কেউ কেউ চুল রাঙ্গানো আবার হাতে মেহেদী লাগানো কিংবা নিজেকে ঈদে নতুন রূপে সকলের মাঝে তুলে ধরতে!

ঠিকভাবে দরজা বন্ধ করেছি তো!

নিজের নিরাপত্তা, পরিবারের নিরাপত্তা নিজেকেই সংরক্ষণ করতে হবে। কারো উপর ভরসা করা মানেই জীবনের ঝুঁকি নেয়া! জেনে শুনে বুঝে এই ঝুঁকি যদি কেউ নিতে চায় তবে সেটা হয় খাল কেটে কুমির আনার সমতুল্য। আসলেই কি নিজের, পরিবারের, মালের  নিরাপত্তা নিজে জোরদার করতে আসলেই কতটা সক্ষম? সকলেই জানমালের নিরাপত্তা চায়। এমতাবস্থায় -

ঈদ উল ফিতরের লম্বা ছুটিতে ঢাকা শহরে বসবাসরত বেশীরভাগ মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন নিজের নিকট আত্মীয় কিংবা সকল সদস্য একসাথে উপভোগ করতে। নগরের বাসাটির নিরাপত্তার জন্য ১/২ টি  তালা কি যথেষ্ট? বাড়ির নিরাপত্তা কর্মী কি পারবেন সকল ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থার মোকাবেলা করতে?


প্রতিটি ঘরের নিরাপত্তা দেয়া যাবে না, সকলে জেনো নিজ দায়িত্ব নিয়ে বাসা বন্ধ করে রেখে যায় এমন প্রস্তাব ইতিমধ্যে উপরমহল থেকে বিগত বছর গুলুতে এসেছে! এবারও একই প্রস্তাব আসবে ঈদে ঘরমুখো মানুষগুলুর প্রতি?
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং দেশের দায়িত্বরত দেশ প্রধানরা যদি জানমালের দায়িত্ব নিতে ৪/৭ দিনের জন্য এমন প্রস্তাব দেন তবে কার কাছে রেখে যাবে সকলে? তাহলে কি আল্লাহ্‌র মাল আল্লাহ ই দেখবে! এমন কথায় ভরসা করবে?

পাল্টাপাল্টি আক্রমন বন্ধ করে দল মত নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষকে মুসলমান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড়  উৎসব ঈদ-উল-ফিতর উদযাপনে সকলের মনোভাব হবে উদার এবং সহনশীল। দল মত নির্বিশেষে সকলেই এক হয়ে ঈদ আনন্দ উদযাপন করবে সেই প্রত্যাশা আশা  বাংলার সকল মানুষের !

বাড়ি গিয়ে ঈদ উৎযাপন করতে গিয়ে যদি বাসার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করতে হয় ভাবতে হয় আসার সময় বাসার তালাটা সঠিক ভাবে লাগিয়েছিলাম তো? দরজা জানালাগুলু কি সঠিক ভাবে বন্ধ করেছি? চোর ঢুকল নাতো? চুরি হল কি? বাসায় ফিরে কি সব লণ্ডভণ্ড পাবো এমন দুশ্চিন্তায় ঈদের আনন্দ নিরানন্দ হয়ে যায় অনেকের!

নতুন জ্বালা, হ্যালো বন্ধুরা আমি …

১. ৩৩৩৩ থেকে কল আসলো! হ্যালো বন্ধুরা আমি তোমাদের প্রিয় হৃদয় খান বলছি… তোমরা যদি আমার সাথে কথা বলতে চাও দেখা করতে চাও তাহলে আমাকে কল করো ৩৩৩৩ এই নম্বরে!

২. ও প্রিয়া ও প্রিয়া তুমি কোথায় ….  প্রিয় গ্রাহক আপনি যদি এই গানটি কলার টিউন করতে চান / বন্ধুকে পাঠাতে চান / ওয়েলকাম টিউন করতে চান/ মোবাইলের রিং টোন হিসাবে ব্যবহার করতে চান তাহলে এই এই এই ধাপের কাজগুলু করুন। মাসিক চার্জ প্রযোজ্য; বিস্তারিত পত্রিকায় দেখুন! ব্যাস  এমন # চাপা আর * চাপার ফাঁদে অনেকেই ইচ্ছে করে আবার অনেকেই অনিচ্ছাকৃতভাবে পা দিচ্ছেন! এদের মধ্যে বয়স্ক মানুষগুলু  অজান্তেই কাজটি করে থাকেন! তারপর বলেন দূর প্রতি মাসে আমার মোবাইল থেকে টাকা কেটে নিয়ে যায়! কে যেন একটা ফোন দিয়ে আমাকে গান শুনায় কোন কথা বলে না!


৩. কিছু মনে করবেন না আপু – আমরা কি জানতে পারি আপনি কোন মোবাইল অপারেটর এর সিম ব্যাবহার করেন! যদি গ্রামীণ ফোন গ্রাহক হন তবে কয়েকটা প্রশ্ন করবো! হুম আমি আমি গ্রামীণ ফোন গ্রাহক! আপা আপনার মোবাইল নম্বরটা প্লিজ!  আপনারা কে? আই ডি কার্ড দেখান! হুম একটি ইভেন্ত ম্যানেজমেন্ট থেকে এসেছে! বাহ্‌ এর পর আমাকে ফোন এসএমএস দিয়ে জালাবেন এই তো? না না আপা! বেশী হলে একটি কল যাবে আপনার ফোনে আমাদের অফিস থেকে। শুধু জানতে যে আমরা কাজটি করেছি কি না! তবে সবাইকে ফোন দেয় না। এই তালিকায় আপনি নাও থাকতে পারেন। বাহ্‌! তারপর! আপা  পুরু নাম, বাসার ঠিকানা বলবেন! ওরে বাবা আমার সব আপনাকে দিতে হবে! আমার নিরাপত্তা নিয়েই সংশয় জাগল! দুঃখিত ভাইয়া সাহায্য করতে পারলাম না! নিজের বিস্তারিত দিতে আমি অনিচ্ছুক!
কোথাও ফোন নম্বর দিতে গেলে চিন্তা ভাবনা করে দেয়া দরকার। নইলে নানারকম বিড়ম্বনায় পরতে হয়!

শুধু একটি দিনের উদাহরণ দেই একজন গ্রাহকের-
সকাল ১০ টায় – স্বপ্ন থেকে এসএমএস এসেছে দারুন অফারের

১২.১০ মিনিটে এসেছে – জিপি স্টার থেকে – গোল্ডেন সিম ৬৮% কমে কেনার অফার

১.০০ মিনিটি এ এসেছে  কিউবি থেকে – ঈদে তোলা ছবি নিয়ে প্রতিযোগিতা এবং জিতলে দুবাই যাওয়ার লোভনীয় অফার

৪.০৮ মিনিটে এসেছে প্রিন্স বাজার থেকে ঈদ শুভেচ্ছা!

এমন করে প্রতিদিন কল, এসএমএস নিয়ে আর কতো বলবে! আর কত জ্বালাবে!

ঈদের টিভি বিনোদন: ভিড়ে হারিয়ে যেতে যেন না হয়

কিছুদিন পর ই আসছে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় উতসব ঈদ উল ফিতর। ঈদ আমেজ সবা জায়গায় চলে এসেছে! বাজার থেকে সুপারমল এমন কি ঘর দোর পরিস্কারের কাজগুলুও সেরে নিচ্ছে সকলে ইতিমধ্যে। আবার কেউ কেউ করছে।

ঈদ এর ছুটি আর আনন্দকে আরও বাড়তি করে আনতে আমাদের টি ভি চ্যানেল গুলুও পিছিয়ে নেই। ৬/৭ দিন পর্যন্ত টানা ঈদ অনুষ্ঠানের আয়োজন! নতুন চলচিত্র থেকে নাটক, কৌতুক, প্রতিযোগিতামুলক গান, নাচের অনুষ্ঠানের কমতি নেই। এই অনুষ্ঠানগুলু সত্যি উপভোগ্য এবং একটু হলেও আলাদা স্বাদ এনে দেয় আমাদের জীবনে।


একটি সময় ছিল – অনুষ্ঠানটি পরিবেশিত হচ্ছে রহিম টেক্সটাইল (কাল্পনিক নাম) সৌজন্যে ! অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে কিছু বিজ্ঞাপন প্রচার হতো …। বিগত কয়েক বছর যাবত বিজ্ঞাপনের বদৌলতে হারিয়ে যায় অনুষ্ঠানগুলু। ২০ এর অধিক বাংলা টি ভি চ্যানেল! প্রত্যেকটি চ্যানেল এর এই একই রকম বেহালদশা! অনুষ্ঠানের মধ্যে যে পরিমান বিজ্ঞাপন দেয়া হয় সেটির জন্য যেই ঘোষণা দেয়া হয়, ঘোষক নিজেই ক্লান্ত হয়ে পরেন পরিবেশিত হচ্ছে …. তারপর নামগুলু বলতে বলতে!
এবং
আমরা দর্শকরা ভুলেই যাই কোন অনুষ্ঠানটি দেখছিলাম কোন চ্যানেলে! নতুন একটি প্রহসন চালু হয়েছে। মেগা ধারাবাহিক বানাতে বানাতে উনারা এখন এক ঘণ্টার নাটক বানাতেই পারেন না! তাই পরিচালক মহোদয়রা ঈদে ৫-৭ পর্বের ধারাবাহিক নাটক বানিয়ে দর্শক জোর করে আটকে রাখার অপচেষ্টা করেন!

যারা বলছেন ভারতীয় নাটক ভারতীয় টি ভি চ্যানেল দেখবেন না, তারাই কিন্তু ভারতীয় আদলে সকল অনুষ্ঠান নির্মাণ করে দর্শকদের বুঝাতে চাইছেন ভারতীয় অনুষ্ঠান আমরাও  বানাতে পারি এবং অনুষ্ঠানের মান নিয়ে নেই কোনো ভাবনা! নেই নিজেদের সংস্কৃতির প্রভাব!

এবার ঈদে ব্যাতিক্রম সকল অনুষ্ঠান এবং ধারা প্রবরতিত হবে বলে আমরা নিরীহ বাংলার দর্শকরা আশা করতে পারি! এটা আমাদের দাবি। এটা আমাদের অধিকার! জোর করে নয় নিজেদের কাজের গুনগত মান দিয়ে বাংলার দর্শক বাংলামুখী করুন!

ঈদ আনন্দ আমরা বিজ্ঞাপনের ভিড়ে হারিয়ে যেতে চাই না ! চাই সুন্দর সুন্দর সুখকর অনুষ্ঠানে হারিয়ে যেতে !
সকলকে অগ্রিম  ঈদ মোবারক ….। সবার জীবনে ঈদ আনন্দ বয়ে আনুক! মুছে দিক গ্লানি এনে দিক অফুরন্ত আনন্দ!

টাকা দিয়ে বাতাস কেনা

টাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত আমরা খাবারের নামে বাতাস কিনছি! কিন্তু কেউ খেয়াল করছি আবার কেউ কেউ করছি না! সন্তানের আব্দার রক্ষার্থে কিংবা কান্না থামাতে আমরা প্রতিদিন এরকম করে ঠকে যাচ্ছি একজন সাধারন ক্রেতা হিসাবে। সেদিকে কর্তৃপক্ষ বলে যে কিছু আছে সেটির অস্তিত্ত বিলুপ্ত হয়ে গেছে কবে সেটি ও কারো জানা নেই।

শিশুদের পছন্দের খাবারের তালিকায় জুস, চিপস, আইসক্রিম ইত্যাদি অন্যতম! কিন্তু সেই খাদ্য কিংবা পানীয়টি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত এবং সঠিক মূল্য কিনা সেটা পিতামাতা, অভিভাবক কেউই ভেবে দেখছে না বলেই একের পর পর বিদেশী চিপস এবং সাথে দেশি চিপস কোম্পানি গুলু তালে তাল মিলিয়ে প্যাকেট ভর্তি বাতাস বিক্রি করছে! প্যাকেট খুললে পাওয়া যাবে ১০/১২ বেশী হলে চিপস এর অস্তিত্ব! কিন্তু ওজন এবং দামে সাথে ঠাসা প্যাকেটে কেড়ে নেয় শিশু অভিভাবকদের পকেটের টাকা !

লম্বা বড় জার এ বিক্রি হয় বিদেশী চিপস  PRINGELS জেটির বাজার মূল্য ২০০-২৫০ টাকা ! ভারতীয় চিপস LAYS , KURKURE একতরফা বাজার দখল করে রেখেছে ব্যাস কয়েক বছর যাবত ! বাজার মূল্য ১২০ – ১৫ টাকা পর্যন্ত আছে নানা স্বাদে নানা রঙের প্যাকেট বন্দি ! কিন্তু যেই মূল্য দিয়ে কেনা হচ্ছে প্যাকেট খুলেই জাদু দেখা যায় ! কারন প্যাকেট এর ভিতরের অর্ধেক এর বেশী অংশ ভরা থাকে বাতাসে ! কিন্তু মূল্য রাখা হয় ওজনে !

সম্প্রতি সেই ভিনদেশী চিপস এর  সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের দেশীয়  POTATO CRACKERS (PRAN, BOMBEY, BD), RING CHIPS, SUN, MERIDIANS, রুচি বেনানা চিপস, প্রাণ চিকেন বাইট, বোম্বে স্টিক ইত্যাদি চিপস এর প্যাকেটও বাতাস ভর্তি ! বোম্বে পটেট  স্তিক এর মূল্য ৫ টাকা মাত্র! কিন্তু প্যাকেটের আকার এবং ধরনে কি করে মাত্র ৫ টাকা মুল্যে বিক্রি করে মুনাফা হয় জানা নেই! কারন এই মূল্য সাধারন ক্রেতা পর্যায়ে!

খাবারে TESTING SALT ব্যাবহার  সকলের  শরীরের  জন্য খুব ক্ষতিকর ! কিন্তু বাজার থেকে কেনা কোন চিপস এই এউ অনুপস্থতি পাওয়া যাবে না! সব খাবারের প্যাকেটের দিব্বি জুড়ে দেয়া হচ্ছে  BSTI অনুমোদিত! দেয়া হচ্ছে নানা রকমের স্তিকার ফ্রি! ফলে বাচ্চারা ঝুঁকে পড়ছে বিষ খাদ্য খেতে। প্যাকেট চিপস-এ কি আসলেই আলু থাকে? কি কি উপাদান দিয়ে বানানো হয় সেটি খতিয়ে দেখতে গেলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হয়ে আসবে নিশ্চিত!

কোন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে বরং আমরা অভিভাবকরা সচেতন হয়ে সন্তানকে বিষ খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত রাখা ছাড়া আর  কোন পন্থা আমাদের দেশে নেই! দায়িত্বরতরা দেশের উন্নয়নে ব্যস্ত তাই আমাদের উন্নয়ন আমাদেরকেই করতে হবে। আমার সন্তানের দায়িত্ব আমি নিবো। টাকা দিয়ে বাতাস কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। সচেতন নাগরিক সমাজ পারে এই বাতাস কেনা থেকে নিজেদের বিরত রেখে অবস্থার পরিবর্তন করতে আনতে !
 


বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন অফিসারের কাণ্ড

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ঢাকা, ১৬ অগাস্ট ২০১৩ শুক্রবার। ইমিগ্রেশন রাতের ফ্লাইট এ অনেক যাত্রীর লম্বা লাইন! দায়িত্বরত  অফিসারদের দায়িত্ববোধ এবং  ইন্টারভিউ নেয়া বড় অদ্ভুত এবং বিব্রতকর। রাত ১২টা, ১টা বেজে যাচ্ছে কিন্তু লাইন আগাচ্ছে না শেষ হচ্ছেনা! যাত্রীদের লাইন ক্রমশ লম্বা হচ্ছে।

এক পরিবারের ৩ জন ৩ লাইনে গিয়ে দাঁড়ালো! যেই লাইনটা আগে আসে সেটাই সবাই গিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। ইমিগ্রেশন সম্পর্কে সবারই কম বেশী জানা আছে। ২/৩ টি লাইন বিদেশী পাসপোর্টধারীরা ফেস করে ৬/৭ টি লাইন বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা ফেস করেন!

বিদেশী পাসপোর্টধারী লাইন সম্পূর্ণ ফাঁকা এবং ওখানে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন অফিসের কেউ কেউ আছেন আবার কেউ কেউ আসন ত্যাগ করেছেন! ইতিমধ্যে নানা দেশের নানা ফ্লাইটের লোকজনের দীর্ঘ লাইনে  পুরু পরিবার নিয়ে ফেরত আসা বাবা মাকে তাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়েকে নিয়ে খুব বিপদে পড়েছে! দাড়িয়ে থাকতে থাকতে চিৎকার কান্নায় মশগুল! ভিতরে এসিও খুব ভালো কাজ করছিল না। পরিবেশ তো বেশ নোংরা এবং অগোছালো যা অন্য একটি দেশের বিমান বন্দরের সাথে তুলনা করা চলেনা।

হুট করে আর একজন ইমিগ্রেশন অফিসার আসন ত্যাগ করলেন! বুঝা গেল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েছেন। উনি টয়লেট গিয়ে আসলে কি করলেন উঁকি মেরে দেখা গেল – মুখ ওয়াশ করলেন ! ক্লান্তি, ঘুম কি কারনে তিনি আসন ত্যাগ করলেন বুঝা গেলো না ! তবে অগ্নিমূর্তি রূপ নিয়ে  অফিসার নিজের আসনে ফিরে এসেই দেখলেন সবাই লাইন বদলের দৌড় ঝাপ করছে! ওমনি উনি চিৎকার শুরু করলেন। যারা লাইন ত্যাগ করছেন তাদেরকে সহজে ছাড়ব না নানা রকম ভীতি প্রদর্শন করলেন উচ্চবাচ্য করে।

হুট করে একজন দায়িত্বশীল অফিসার কোথা থেকে জেনো এসেই চিৎকার শুরু করলেন ! কি ব্যাপার লাইন এত দীর্ঘ কেন ! আপনারা কি করছেন ? উনি চিৎকার করে বললেন – যাদের সাথে বাচ্চা আছে তারা সরে বিদেশী পাসপোর্ট ডেস্ক এ আসেন ! উনার এমন চিৎকার এবং আদেশে সকলেই নড়ে চড়ে বসলেন! মুহূর্তেই লাইনগুলু দীর্ঘ থেকে শুন্য হয়ে গেলো!

ইমিগ্রশন থেকে মুক্তি পেয়ে মহাআনন্দে ট্রলিতে করে নিজের হাতে করে নিয়া আসা ব্যাগগুলু নিয়ে এগুচ্ছেন একজন ভদ্রলোক! হুট করে পথ আটকে দাঁড়ালেন একজন ওয়াকিটকি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অফিসার! দাঁড়ান – আপনার এই ব্যাগে কি আছে? উত্তরে – কম্পিউটার! আচ্ছা যান তাহলে!

বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে পাবলিক গাড়ি। ট্যাক্সি খুঁজে বের করা অনেক দুঃসাধ্য। একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে কয়েকজন ট্যাক্সি লাগবে কিনা জানতে চায়! আমাদের দেশের ট্যাক্সি ক্যাবগুলু দুর্যোগপূর্ণ বেহাল নোংরা অবস্থা এবং অকারনে উচ্চ ভাড়া হাঁকানো নিত্য ব্যাপার।

এভাবে যাত্রীদের হয়রানী কি আদৌই বন্ধ হবে? কোনো মহল কি আছেন যারা শক্ত হাতে সব কিছু নিয়ন্ত্রনণ করবেন?