বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৩

শুধু অস্ত্র দিয়ে খুন করলেই খুনি? অদৃশ্য নিরব ঘাতকরা …

” না ভাই এটা কোন নতুন গল্প নয়। সাদা কালো গল্পকে রঙিন করে ধরছি আজ। আসুন ভাই আসুন। দেখুন জানুন কি হচ্ছে এসব “
ডাক্তারদের সাথেই যুক্ত হল ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর ফার্মাসিউটিকেলস অসাধারন একটি অমানবিক দুর্নীতিযুক্ত সখ্যতা।  ডাক্তারদের ভাষায় যেটা মানব সেবা!
ফার্মাসিউটিকেলস ভাষায় স্বল্প মূল্য দিয়ে ভাল মানের ঔষধ!
ডায়াগনস্টিক সেন্টার বলে সব চেয়ে কম খরচে সকল ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা! আমাদের কাছে আসুন ২৫% কম সাশ্রয় করুন!
কিন্তু আসলে হচ্ছেটা কি? পর্দার ওপারে কি হচ্ছে? অন্ধকার কালো রুমে কে কি করছে? আর আমরা কি পাচ্ছি, দেখছি, জানছি?  এই ব্যাপারটা কারও কাছেই আজ গোপন নয়। তবে খুব স্পষ্টও নয়। কারন আসল সত্যিটা জানতে চাই প্রমান, উদাহরণ।
বড় মানের বিখ্যাত নামি দামী ডাক্তার মানেই বেশী বেশী দুর্নীতি এবং এবং অর্থ উপার্জন সহজেই!
ঔষধ কোম্পানিগুলো তাদের ঔষধের প্রমোশন করতে কি কি খরচ, পরিশ্রম করে সেটাকে যদি একটু তুলে ধরা যায় তবে দৃশ্যটা এমন:
- স্যাম্পল ঔষধ তো দিচ্ছে ভুঁড়ি ভুঁড়ি যার নেই কোন জুড়ি! (যেগুলো ডাক্তাররা বিক্রি করে ভাল অর্থ উপার্জন করে প্রতি মাসে)
- নানা ধরনের উপহার সামগ্রী! (এটা ডাক্তারের ডিগ্রি ভেদে নির্ভর করে এবং দৈনন্দিন জীবনের সব মিলে যায়)
- চুক্তি করা! যদি তাদের নির্দিষ্ট কোন পণ্য তাদের বেঁধে দেয়া সময় পর্যন্ত লিখা হয় তবে বিপরীতে মিলবে গাড়ি বাড়ি! (উপার্জিত অর্থ জমা পরে থাকে ব্যাংকে। যাকে বলে অলস মানি)
ইত্যাদি ধরনের অফার দিয়ে যা হচ্ছে, ঔষধের দাম বেড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সাধারন জনগণ ভুক্তভুগি হচ্ছে! কারন সকল কোম্পানি ঔষধের মান নিয়ে আছে ভয়ানক রকম সংশয়!
ঢাকা শহরে অনেক নামি দামী ডাক্তারকে বাড়ি, গাড়ী দিয়েছেন কিছু ঔষধ কোম্পানি! এটা অনেকেরই জানা! 
সাথে যুক্ত হয়েছে বেশ কিছু বিদেশী ঔষধ। আমাদের দেশে একই ওষুধ একেক কোম্পানির মূল্য একেক রকম। ওষুধের মূল্য নির্ধারণে নেই কোন নীতিমালা। যে যার মত করে ঔষধ বানাচ্ছে। বিক্রি করছে। আমরা যারা ক্রেতা তারাও কিনছি ওইসব ঔষধ। কখনো জেনে আবার কখনো বা না জেনে। কিছু করার নেই। আমাদের যে হাত পা বাধা!
পক্ষান্তরে ডাক্তাররা কি করেন? রোগীর দরকার নেই এমন সব ঔষধ লিখতেও দ্বিধাবোধ করেন না এবং মাঝে মাঝে পুশ করে দেন অপ্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন! যেটার বাজার মূল্য ২০০ টাকা হলেও ডাক্তারদের চাটুকারিতার কাছে হেরে যায় সাধারন নির্বাক মানুষগুলো।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে ডাক্তারদের একটি বিরাট চুক্তি! ৫০% থেকে ৪০%, ৩০% ভাগ কমিশন দেয়া হয় পরীক্ষা নিরীক্ষা মূল্য থেকে। যে জন্য ডাক্তাররা অপ্রয়োজনে ও নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে থাকেন এবং তাদের কমিশন প্রাপ্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রোগীদের পাঠানো হয়। ডায়াগনস্টিক সেন্টার যদি ডাক্তারদের এমন সুবিধা না দিয়ে সাধারন রোগীদের দিতো তাহলে কত উপকার হতো গরিব ও সাধারন খেঁটে খাওয়া মানুষগুলোর।

এই ধরনের ক্রাইমগুলো সবারই জানা আছে। সরকার কিংবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও ওয়াকিববাল। কিন্তু তাদের মুখ বন্ধ, চোখ বন্ধ করে দিয়েছেন বিরাট অঙ্কের ঘুষ।
ডাক্তার, ফার্মাসিউটিকেলস, ডায়াগনস্টিক সেন্টারদের সাথে যুক্ত হয়েছে বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল। তাদের সম্মিলত দুর্নীতিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে ভুগতেছে অসংখ্য মানুষ।
একজন মানুষ কি করে অন্য একজন মানুষের জীবন কেড়ে নেয় অর্থ উপার্জনের জন্য? তবে এরা কি খুনি না? অস্ত্র দিয়ে খুন করলেই কি খুনি হয়? ওষুধ দিয়েও যে খুন করা হচ্ছে অজস্র মানুষ! এদের বিচার কে করবে? এই খুনিদের বিচার হওয়া দরকার। জীবন বাঁচানোর নামে যারা যারা মিলে খুন করছে বেঁচে থাকার ইচ্ছে পোষণ করা মানুষ গুলোকে।
মানব সেবার নামে ডাক্তার, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসপাতাল, ঔষধ কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত দুর্নীতি ঠেকাতে কে আসবে এগিয়ে? কিভাবে ঠেকাবো?
অতি সম্প্রতি বেশ কিছু ডাক্তারের পদন্নোতি হয়েছে। যাদের পদন্নোতি হওয়ার সকল যোগ্যতা সম্পন্ন করেনা! তারপরও কোন এক ঐশ্বরিক আর ভৌতিক  ক্ষমতা বলে তারা অনেকে স্যার! কেউ সহকারী, কেউ সহযোগী আবার কেউ পূর্ণ অধ্যাপক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর-ই নাড়ছে এইসব কলকাঠি। সাথে আছেন কিছু ক্ষমতাধরের কলমের কালি। তাদের এই কালিতে যে কোটি কোটি মানুষ ভুগছে এবং ভুগবে সেই দিকে কারও ভ্রুক্ষেপ নেই!
১৫-০৪-২০১৩
বাংলা ২রা বৈশাখ ১৪২০

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন