বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৩

অটিজম সচেতনতা দিবস

২ এপ্রিল সারা পৃথিবীতে এক সাথে ” অটিজম সচেতনতা দিবস “ এক যোগে পালিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও পালিত হচ্ছে নিরবে নিভৃতে।  বেশ কয়েক বছর যাবত আমাদের দেশে অটিজম অটিস্টিক বাচ্চা নিয়ে খুব মহড়া চলছে। কিন্তু তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা। আমার একজন সহকর্মীর ছেলেকে গত বছর অটিস্টিক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারপর থেকে উনি শিশু হাসপাতালের “শিশু বিকাশ কেন্দ্র” গিয়েছেন। পাশাপাশি একটা স্কুল খুঁজে পেতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। কারণ মানসম্মত স্কুল নাই বললেই চলে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনির একটি স্কুল আছে ” প্রয়াস “ সেখানে কোটা সীমিত। লালমাটিয়ায় আছে  ” ককাম্বুরা “ নামের একটি স্কুল। এমন হাতে গুনা কয়েকটি স্কুল আছে ঢাকা শহরে। বাকি জেলা শহর গুলোয় তো নাই-ই।
একজন অটিস্টিক সন্তানের বাবা মা জানেন তাদের সন্তানকে নিয়ে কত বেগ পেতে হয়। সবাই তাদের বাইরে রাখতে চায়। দুঃখজনক হলেও সত্য অটিস্টিক বাচ্চাকে অনেকে আবার পাগল বলে ডাকে! বিশেষ করে যেই বাচ্চাগুলো অবহেলিত সমাজে বড় হয়ে উঠছে।
একজন সন্তান সম্ভবা মাকেও অটিস্টিক বাচ্চার কাছে যেতে দেয় না। যদি পেটের অনাগত সন্তান অটিস্টিক হয়! আমাকেও এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুক্ষীণ হতে হয়েছিল। যখন আমি সন্তান সম্ভবা ছিলাম। আমার এক ভাই ভাবির বাচ্চা অটিস্টিক। উনারা দেশে ছেড়েছেন অনেক বছর আগেই। আমাদের দেশে থাকতে উনাদের মোটামুটি এক ঘরে করে দিয়েছিল আত্মীয় স্বজন।
আমাদের দেশ থেকে আমেরিকায় অটিস্টিক বাচ্চা জন্মের হার অনেক বেশি। পাশাপাশি সুন্দর ওই সব বাচ্চাদের সুযোগ সুবিধারও কমতি নেই। শুধু যতরকম সীমাবদ্ধতা আমাদের দেশেই। আমার সন্তান অটিস্টিক তাকে আলাদা স্কুলে পড়াশুনা করতে হবে। কিন্তু উন্নত দেশে কিন্তু এমন কোন বিধান, রীতিনীতি কিছুই নাই। সকল বাচ্চা এক স্কুলেই পড়াশুনা করবে। সবার সাথে খেলবে বড় হবে। তার অধিকার সে বুঝে পাবে। এই মানুষটিকেও আমরা আমাদের দেশের সম্পদ হিসেবে তৈরি করতে পারি। সব বাচ্চাকেই যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে সেটা ভাবাটা ভুল এবং অন্যায়।
প্রতিটি নাগরিক, প্রতিটি মানুষকে দেশের সম্পদ মনে করতে হবে! এদেরও মেধা,যোগ্যতা আছে। অনুভূতি চাওয়া পাওয়া সবকিছু আছে। এদের আলাদা করে দেখে আলাদা করে দিয়ে পিছিয়ে রাখার কোন মানে হয় না। এটা অসাংবিধানিকও। সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান যোগ্যতা।
সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। প্রতিদিন সন্মান করা হোক দেশের সকল মানুষকে। আলাদা করে, কাউকে ভাগ না করে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হলে সব কিছু অনেক স্বাভাবিক সাবলীল সুন্দর ও সম্মানজনক হতো। এটাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব কর্তব্য।
০২-০৪-২০১৩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন