বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৩

বিদ্যুৎ বিভ্রাট!

গ্রীষ্ম শুরু হতে না হতেই গত দুইদিন যাবত বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অসহ্য হয়ে গেলাম। গতকাল এবং এর আগের দিন বাসায় ফিরে বিদ্যুৎ পাই নি বললেই চলে! IPS কতক্ষণ সামলাবে আমাকে ? কিন্তু আমার প্রতিবেশী! যার কেনার সামর্থ্য নাই তাদের কি হচ্ছে? ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে নিয়ে মা বাবা বাসার ছাদ কিংবা রাস্তায় নেমে পড়ছেন। অদ্ভুত হলেও সত্যি “ বলতে হচ্ছে এখন আমাদের বাসায় মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে ” ! আর গ্রামের মানুষের বিদ্যুৎ বঞ্চণার কথা নাই বা বর্ণনা করলাম। তাদের তো নতুন করে অন্ধকার যুগে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
সেদিন পত্রিকায় পড়লাম গ্যাস সরবরাহ চালু না থাকার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাঘাত হচ্ছে !গ্যাস কম হচ্ছে চাহিদার তুলনায়। গাড়িতে সিএনজি ব্যবহার থেকেও অনেক জরুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন। দুটির সাথে কোন ভাবেই মানিয়ে নেয়া যায় না। এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের পুকুর চুরি সাগর চুরির কথা তো জন্মের পর থেকেই শুনছি। এদের তো কোন শাস্তির কথা শুনি না।
গরম পড়লেই IPS ব্যবসা রমরমা। একটি সুখ্যাত(!) কোম্পানি থেকে কেনা আমার IPS টি। কিন্তু যেই যাদু দেখাচ্ছে ওদের ব্যাটারি, সেটা অসহ্য। তারপরও চলছে, চালাচ্ছি। কোন বিকল্প উপায়তো নেই সাধারণ নাগরিকদের।
হিসেব করলে দেখা যায় একটি মোমবাতি এক ঘণ্টাও জ্বলে না। বেশি বেশি বিক্রির জন্য মোমবাতি বানানোর প্রযুক্তিও পাল্টে গেছে বুঝি! অথচ প্রতি রাতে বিদ্যুৎ থাকেনা বেশিরভাগ সময়টায়। তাই একটি মোমবাতি ৫/১০ টাকা হলে প্রতি রাতে ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকলে মোমবাতি বাবদ একটি সাধারন পরিবারের অতিরিক্ত কতো টাকা গুনতে হচ্ছে। যেখানে এমনিতেই মধ্যবিত্ত পরিবারের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি।
বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নির্মাণ হয়েছে। তারপর ও মিটছে না চাহিদা। শুনতে পাওয়া যায় এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের নামে যাদেরকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ দিয়েছে সরকার। তাদের নেই কোন অভিজ্ঞতা এবং তারা সকল   SECOND HAND যন্ত্রপাতি এনে উৎপাদনকেন্দ্র চালু নামের নাটক করছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা বা নেওয়া হয় না। বোধ করি তারা সরকারের কাছের লোক!
এরকম প্রতি বছর বিদ্যুৎ বিভ্রাট হবে এবং ২০২১ সালের স্বপ্ন আর কতদিন দেখতে হবে? আমি তো আমার সন্তানের স্বপ্ন পূর্ণ করতে পারছি না অনেক সীমাবদ্ধতার কারনে। তারপর যদি এই ধরনের জাতীয় সমস্যায় পড়তে হয় তবে কিভাবে চলবে জীবন? আমি তো আয়কর দিতে কার্পণ্য করিনা! আমি তো নিয়মিত ভ্যাট দিয়েই পণ্য কিনি! তাহলে সরকারের রাজস্ব কোষাগার গড়তে আমার যে অবদান সেটার ফল কোথায় ভোগ করছি? এর জবাব কে দিবে?
বাংলাদেশে আদৌ কি বিদ্যুৎ বিভ্রাট সমস্যার সমধান হবে? নাকি রাতের কাজ দিনে শেষ করেই সন্ধ্যা বাতি জ্বালিয়েই নিভিয়ে ঘুমিয়ে পরবো? সন্তানের লেখাপড়া লাটে উঠলে উঠুক! এটা কি সম্ভব এই সভ্যতার যুগে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন