বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০১৩

এত বৈষম্য কেন?

মেধাবি ছাত্রের স্বপ্নের পড়াশুনার উদ্দেশ্য থাকে মেডিক্যাল, বুয়েট, কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান/বাণিজ্যিক বিভাগের কোন একটি বিষয়ে ভর্তি হওয়া। এবং এদের কারো স্বপ্ন পূর্ণ হয় আবার কারো হয় না। কেউ ঝরে পরে কেউ ফিরে দাঁড়ায় কেউ উঠে দাঁড়ায়। উচ্চতর শিক্ষায় পাশ করার পর সকলের লক্ষ্য (একটি বেশিরভাগের) বিসিএস নামক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একজন প্রথম শ্রেণীর সরকারী  কর্মকর্তা হয়ে কাজে যোগদান করা।
এবং যারা সফল হয় তাদেরকে প্রায় একরকম দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয়। তারপর শুরু হয় নানা অদ্ভুত বৈষম্য। কিন্তু কেন?
পুলিশ কর্মকর্তা - সরকারী গাড়ী, বাড়ি,  খাদ্য ( রেশন ), ফোন সুবিধা, বিদেশ থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ , উচ্চতর শিক্ষার জন্য বৃত্তি  পেয়ে থাকেন এবং তাদের  নিয়োগও হয় জেলা স্তরে। উনাদের মধ্যে পদোন্নতিও হয় খুব দ্রুত।  কেউ কেউ দেহ নিরাপত্তা রক্ষীও পান! এই সব পুলিশ কর্মকর্তারা অনেকেই কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পাশ করে থাকেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা/ডাক্তার - কাজে যোগদানের জায়গাটি অবশ্যই কোন অজপাড়াগাঁয়ে। যেখানে থাকা খাওয়ার সংস্থান নেই। অনেক ক্ষেত্রে থাকেনা বিদ্যুৎ কিংবা যেখানে যোগদান করতে বলা হয়েছে দেখা যায় সেখানে ভবনটি জরাজীর্ণ। বাধ্যতামুলক যোগদান! সুবিধা বলতে তেমন কিছুই নেই। কেবল দেশে পড়াশুনা করতে ছুটি দেয় এবং সেই ক্ষেত্রে শর্ত প্রযোজ্য। শর্তগুলু বিশদ আকারে বর্ণনা করছি না। তারপর যদি কোনো দিন রাজধানী কিংবা জেলা শহরের হাসপাতালে কাজে যোগ দেয়ার সুযোগ পান, ঐ টুকু পর্যন্তই। নেই কোন আবাসন ব্যবস্থা।
শিক্ষা অধিদপ্তর - স্যাররা ভাল আছেন সব সময়। প্রফেসর স্যারদের কথা কে না জানে! ছাত্র বাসায় গিয়ে না পরলে পাশ মিলবে না। তবে তারা কোনো সুবিধা সরকার কোষাগার থেকে পান না।
এসি ল্যান্ড- সবাই-ই পরিচিত। ভুমি সংক্রান্ত কাজে জড়িত। অতি সম্প্রতি এমন একজন কর্মকর্তার গল্প শুনলাম। যার বাসা অফিসের কাছে তাই তিনি মাতৃত্ব কালীন ৬ মাসের ছুটি কাটাবেন না।
অন্যান্য অধিদপ্তর – একবারে অনেকের কথা বললে বলতে হয় সচিবালয়ে যারা আছেন তারা অনেক ভাল আছেন।
তবে সকল বিসিএস কর্মকর্তার বেতন অঙ্ক এক! কিন্তু যে বেতন দেয়া হয় সেটির সাথে জীবন জীবিকার নেই কোন মিল। সব চেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় সরকারী কর্মকর্তারা। যদিও বেশির ভাগই দুর্নীতিবাজ, ঘুসখোর। যেখানে দুর্নীতি দমন কমিশনে দুর্নীতি হয় সেখানে দুর্নীতি হবেনা কোথায়? তবে এটাও স্বীকার করতে হবে এর জন্য সরকারের অবহেলা দায়িত্বহীনতা অনেক দায়ী !
সরকারী সকল কর্মকর্তাদের বেতন এত কম যে, এই জন্য তারা
- অনেকে বাধ্য হয়ে দুর্নীতি করে।
- আবার কেউ ঘুষ দিয়ে চাকরী নেয় তাই সেই টাকা তুলে।
- আবার কেউ ঘুষ খেয়ে ধনী হতেই সরকারী চাকরী খুজে নেয়।
- কেউ স্বভাবগত কারন বলে, অটো কমিশন পাই।
একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তাও দেখা যায় রেশন পাচ্ছে। হাসপাতাল সুবিধা পাচ্ছে। আবার একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা এই সব কিছুই পাচ্ছেনা। সরকারের দপ্তর ভেদে সুযোগ সুবিধা বণ্টনে শুভঙ্করের একটি ফাঁকি আছে। যেটি সকলের-ই জানা তথ্য। তাই অনেকের লোভ সরকারী চাকরী আবার কেউ মুখ ফিরিয়ে নেয় সরকারী চাকরী থেকে!
বেতনের ব্যাপারটি শুধু বিসিএস কর্মকর্তাদের জন্যই যে নাজুক সেটা নয়। সকল সরকারী চাকরিজীবীর অবস্থা এক।
যত যাই হোক ঘুষ দেয়া , নেয়া দুটি অপরাধযোগ্য কাজ। সেটা জেনেশুনে আমি নিজেও অনেক বার ঘুষ দিয়েছি স্বামী সরকারী কর্তা। চাকরীর জায়গা  বদলের কাগজটি আনতে গেলেও ২০০ টাকা দিতে হয়। সুন্দর পদ্ধতি ঘুষের। অনেকটা প্রেমপত্র নিবেদন করার মত। যেটি আমি করেছি। আমি যেভাবে দিয়েছি ১০০/২০০ টাকার ঘুষ !
সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কোন লাভ নেই ! তাই করছিনা ! শুধু মান বণ্টন তুলে ধরলাম

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন